Thursday 11 June 2020

গ্রন্থ: বিদআত সম্পর্কিত বিতর্কের চির – নিরসন [ পর্ব ১ ]

গ্রন্থ: বিদআত সম্পর্কিত বিতর্কের চির – নিরসন [ পর্ব ১ ]
লেখক:। মুফতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ আল কাদরী #islamic_research_mission



বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।


ধর্মব্যবসায়ী দরবারী শাইখদের দুটি বিশেষ পরিভাষার ভ্রান্ত ও যথেচ্ছ অপব্যবহার মুসলিম উম্মার মধ্যে এমন দলাদলি, কোন্দল ও ঝগড়া-বিবাদের কৃষ্ণাভ পরিমন্ডল সৃষ্টি করেছে যে মুসলিমদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ গোমরাহির অতল গহ্বরে নিমজ্জিত হয়েছে এবং সামগ্রিকভাবে মুসলিম উম্মাহ গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে এসে দাড়িয়েছে। এই দুটি বিশেষ পরিভাষা হলো শিরক ও বিদআত। নরেন্দ্র মোদি বা তার পার্টির মন্ত্রী- নেতারা যেমন “পাকিস্তান”ও “মন্দির” এই শব্দদ্বয় ছাড়া 30 সেকেন্ড ভাষণ দিতে পারেন না, তেমনি একটি বিশেষ সম্প্রদায়ভুক্ত এই দরবারী শাইখ গণ “শিরক” ও “বিদআত” পরিভাষা দুটির ব্যবহার ছাড়া 30 সেকেন্ড কোনো বক্তব্য দিতে পারেন না। কথাই কথাই বিনা দ্বিধায় তারা শিরক ও বিদ’আত পরিভাষা দুটি প্রয়োগ করে মুসলিম উম্মাহর উপর বিদআতী ও মুশরিকের ফতুয়া চাপিয়ে দেন যা অত্যন্ত জঘন্য অজ্ঞতার পরিচায়ক।


এই সকল দরবারী আলেম এবং তাদের অনুগামী মৌলভীরা নিজেদের ধারণকৃত ভ্রান্ত ধারণা ও মনগড়া আকিদাকে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষে কিছু সিলেক্টিভ হাদিসকে ব্যবহার করেন এবং এই হাদিস শরীফ সমূহের পরিপূরক ও ব্যাখ্যামূলক হাদিস শরীফ গুলো সম্পূর্ণ চেপে রাখেন। ঘুণাক্ষরেও সেই হাদীস শরীফ সমূহ তারা ব্যবহার করেন না। আবার যে সিলেক্টিভ হাদিসগুলো তারা ব্যবহার করেন, তাও আগে-পরের সম্পর্ক ছিন্ন করে এক বিশেষ অংশকে এমন কুশলতার সঙ্গে ব্যবহার করেন যে পাঠক বা শ্রোতা বর্গের নিকট মনে হয়, হাদিসের এই অংশই হচ্ছে মূল হাদিস। অথচ বাস্তবে তা হচ্ছে একটি দীর্ঘ হাদিসের অংশবিশেষ। এরূপ বিকৃতভাবে হাদিস শরীফ উপস্থাপিত হওয়ার ফলে সাধারণ মুসলমানগণ ভ্রান্ত ধারণার শিকার হন। এভাবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদিস শরীফ কে নিয়ে চলে বিশাল তামাশা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, সাহাবায়ে কেরাম, আহলে বাইত এবং আউলিয়া কেরামের এরা নির্দ্বিধায় বেয়াদবি করেন। নিজেদের বিদআত ও বেয়াদবি কে অন্তরালে রাখতে তারা মুসলিম উম্মাহর উপর ঢালাওভাবে শিরক ও বিদআতের ফতোয়া প্রদান করেন। সুপরিচিত ও প্রসিদ্ধ সুন্নত, মুস্তাহাব এবং মুবাহ আমল কে বিদআত বলে বিরোধিতা করা এদের মৌলিক পরিচয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কখনো হাদিসের text এ এবং কখনো হাদিসের সনদে তারা হাদীস বর্ণনাকারীদের অপবাদ রটান এবং জয়ীফ হাদিস কে জাল হাদীস বলে প্রচার করেন। নিজেদের মতের বিপরীত হলে হাদীসটিকে জয়ীফ কিংবা জাল বলতে এদের জিহ্বা কাঁপে না।

[ চলবে ]

No comments:

Post a Comment