Thursday 11 June 2020

মুক্তিদাতার জীবনকথা [ নবীসম্রাট এর সীরাত ] : পর্ব ১

মুক্তিদাতার জীবনকথা [ নবীসম্রাট এর সীরাত ] : পর্ব ১
লেখক: মুফতী মুহম্মাদ আবুল কালাম আযাদ আল কাদরী [ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের গুলাম]


       সীরাত অর্থ জীবনী। এই সিরাতের হাত ধরে ইতিহাস নামক বিষয়টির ক্রমবিকাশ ও সুষমামন্ডন। প্রাচীনকালে ইতিহাস রচনা আরম্ভ হয়েছিল বটে। কিন্তু তা ছিল অসংলগ্ন ও অসম্পূর্ণ। মুসলিমরা সর্বপ্রথম নবীসম্রাট মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সিরাত বা জীবনী কে কেন্দ্র করে প্রকৃত ইতিহাস রচনার ধারাক্রম শুরু করেন। নবীসম্রাট এর সিরাত রচনার জন্য সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেইগণ দ্বারে দ্বারে ধরনা দিয়ে হুজুর সম্পর্কিত সকল খুঁটিনাটি তথ্য অনুসন্ধান, সংগ্রহ ও লিপিবদ্ধ করেন। এরই সূত্র ধরে মুসলিমরা “আসমাউর রিজাল” নামক এমন এক উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন শাস্ত্র আবিষ্কার করেন যার মাধ্যমে 5 লক্ষ লোকের জীবনী জানা যায়। এরূপ দৃষ্টান্ত অন্য জাতির মধ্যে বিরল।


      যেহেতু সিরাত তথা ইতিহাসের উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশের কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছেন নবীসম্রাট মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, তাই বিশ্ব ইতিহাসে এ পর্যন্ত কতজন তার সীরাত রচনা করেছেন তার পরিসংখ্যান বের করা দুঃসাধ্য বিষয়। সিরিয়ার দামেস্ক থেকে প্রকাশিত “আল মুক্তাবিশ” নামক পত্রিকায় আজ থেকে প্রায় 93 বৎসর পূর্বে একটি পরিসংখ্যানে বলা হয়েছিল যে কেবল ইউরোপের বিভিন্ন ভাষায় নবী সম্রাট সম্পর্কে প্রায় তেরশত গ্রন্থ লেখা হয়েছে। 93 বছর পর এই সংখ্যা বর্তমানে কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে তা অনুমান করাও প্রায় অসম্ভব। বাকি থাকল মধ্যপ্রাচ্যসহ অবশিষ্ট বিশ্বের কথা। লাখ লাখ সীরাত গ্রন্থের নিখুঁত পরিসংখ্যান দেওয়ার কথা ভাবতে পারি না বটে! তবে এটুকু অনায়াসে বলতে পারি যে নবীসম্রাটকে নিয়ে যত নিয়ে যত সিরাত রচিত হয়েছে, মানব ইতিহাসে দ্বিতীয় টি কাউকে নিয়ে এমন মহাকান্ড ঘটে নি। তিনি উপস্থিত বিশ্বজুড়ে। সকল ভাষায়। সর্বত্র। বিভিন্ন আঙ্গিকে। বিভিন্ন ব্যঞ্জনায়। বিভিন্ন প্রেক্ষিতে। এতে পুষ্ট হয়েছে বিশ্ব ইতিহাস। আর বিশ্ব সাহিত্য হয়েছে নবীসম্রাটের অনুপম ব্যক্তিত্বের মাধুরীতে বাংময়।

No comments:

Post a Comment